পাটের বীজে আছে হোমিকরসিন নামে নতুন এন্টিবায়োটিক।যা আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা পাটের বীজ পরীক্ষা করে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থেকে খুঁজে বের করেছন। অ্যান্টিবায়োটিটি অনেক শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।
২৭ মে আন্তজার্তিক প্রকাশানা সংস্থা ন্যাচারের সাইন্টিফিক রিপোর্টস জার্নলের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন গবেষক পাটের বীজ থেকে শক্তিশালী এই অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করতে সক্ষম হয় । জানা যায় ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অণুপ্রাণ ল্যাবে ৩ বছর ধরে চলমান গবেষণার ফসল হিসেবে আবিষ্কার হয় পাটের বীজ থেকে আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকটি।
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপিকা হাসিনা খান , অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম এবং জীন প্রকৌশল ও জৈব প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন ছিলেন নেতৃস্থানীয় পাটের বাজী থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে। তাদের সাথে কাজ করেছেন বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের (বিসিএসআইআর) সদস্য এএইচএম শফিউল ইসলাম মোল্লা। এছাড়া গবেষক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের ৩ জন শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার, মাহবুবা ফেরদৌস, বদরুল হায়দার এবং আল আমিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা হাসিনা খান দীর্ঘদিন ধরে পাটের জীবন রহস্য নিয়ে গবেষণা করছে । তিনি গবেষনা করতে গিয়ে খোঁজে পান বিভিন্ন অনুজীব। মূলত তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকে শুর হয় দল গঠন করে গবেষনা।
এই গবেষণা থেকে বেরিযে আসে চমৎকার সব তথ্য। পাটের বীজে ৫০টির অধিক অনুজীব বসোবাস করে। তাদের মধ্যে স্টেফাইলো কক্কাস হোমিনিস নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিযা থাকে। যা নিজের শরীর থেকে এমন কিছু তৈরি করে যার দ্বারা অন্য ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়। এই ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের ৫টি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছেন গবেষকদল।
এর মধ্যে দুটি ভ্যারিয়েন্টের বিষয় আন্তজার্তিক প্রকাশানা সংস্থা ন্যাচারের সাইন্টিফিক রিপোর্টস জার্নলে প্রকাশ করা আছে । বাকী তিনটি ভ্যারিয়েন্টের কার্যকারিতা নিয়ে কাজ করছেন গবেষকদল।
যাদের দেহে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছেনা তাদের দেহে হোমিকরসিন কাজ করবে খুব ভালো ভাবে । কিছু শক্তিশালি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করবে অ্যান্টিবায়োটিক হোমিকরসিন। মানুষের দেহে সুপার বাগ নামে কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে যা বাজারে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে নির্মূল করা যায় না । কিন্তু হোমিকরসিন দিযে তা নির্মূল করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
সরকারের পৃষ্টপোষকতা থাকেলে হোমিকরসিন অ্যান্টিবায়োটিক দ্রুত বাজারজাতকরন সম্ভব হলে আশা করছেন তারা । যে কোন অ্যান্টিবায়োটিক বাজারজাতকরনের জন্য কমপক্ষে ৫ বছর সময় লাগে।
তথ্য সূত্র: আমার সংবাদ।
মন্তব্য করুন