ঢাকা, ২৮ এপ্রিল: দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কার্যকর ইপিএস (Employment Permit System) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী পাঠানো হলেও বর্তমানে প্রায় ২১,০০০ কোরিয়াগামী কর্মী চরম অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন।
একটি স্মারকলিপির মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসব কর্মীদের পক্ষে দাবি জানানো হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ইপিএস কর্মীদের প্রক্রিয়াটি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বোয়েসেলের অপেশাদারিত্ব, অনিয়মতান্ত্রিক রোস্টার ব্যবস্থা এবং বাস্তবতানির্ভর পরিকল্পনার অভাবের কারণে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন আজ ভঙ্গ হতে চলেছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, রোস্টারে অন্তর্ভুক্ত থাকা সত্ত্বেও অনেক কর্মী বছরের পর বছর কোরিয়ায় যেতে পারছেন না। একই সঙ্গে নতুন করে সার্কুলার দিয়ে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোয় আগের রোস্টারভুক্তদের বিদেশযাত্রা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তাদের দাবি, কোরিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্তির হার প্রতিবছর কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ইপিএসের মাধ্যমে কর্মী পাঠানো হুমকির মুখে পড়েছে, যা ভবিষ্যতে এই কর্মসূচির কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, মেধা, শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করে বিভিন্ন ধাপে উত্তীর্ণ হওয়া কর্মীরা এখন কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার শিকার। এক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্নভঙ্গের পাশাপাশি মানসিকভাবে অনেকেই চরম বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছেন।
স্মারকলিপিতে ৯ দফা দাবির মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
- ডিলিট হওয়া বা হতে যাওয়া রোস্টারভুক্তদের পূনরায় রোস্টারে অন্তর্ভুক্তির নিশ্চয়তা;
- নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে মালিকদের কাছে ফাইল পাঠানো বাধ্যতামূলক করা;
- ৭৫-৮৫% রোস্টারভুক্ত কর্মী বিদেশে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নতুন সার্কুলার বন্ধ রাখা;
- প্রতিটি বাণিজ্যিক জোনে সরকারি এজেন্ট নিয়োগ;
- আর্থিক লেনদেনমুক্ত ভিসা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা;
- নতুন খাত সৃষ্টির মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রোস্টারভুক্তদের বিদেশযাত্রা নিশ্চিত করা।
স্মারকলিপির শেষাংশে বলা হয়, যদি বর্তমান অব্যবস্থাপনা দূর করে রোস্টারভুক্তদের সমস্যা দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে প্রার্থীরা চরম মনোবৈকল্যের শিকার হয়ে আত্মঘাতী সিদ্ধান্তেও নিতে পারেন।
এজন্য তারা রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং বোয়েসেলের কাঠামোগত সংস্কার দাবি করেন, যাতে করে ২১,০০০ কর্মীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।