প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের খুব কাছের সহযোগী ড. খলিলুর রহমানের প্রশংসা করেছেন। শনিবার (৫ এপ্রিল) শফিকুল আলম তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে তার ভালো দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ড. খলিলুর রহমান আমাদের দেশের বাইরের নীতির কিছু জরুরি বিষয়ে নতুন করে মনোযোগ এনেছেন।
সকালের পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ড. খলিলুর রহমান খুবই শান্ত প্রকৃতির মানুষ। তিনি জাতিসংঘের একজন বড় কর্মকর্তা ছিলেন এবং বাংলাদেশের কূটনীতিকদের মধ্যে প্রথম সরকারি কর্মকর্তা (বিসিএস ক্যাডার)। কয়েক মাস আগে যখন তিনি অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেন, তখন আমি তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। আমাদের কয়েকবার দেখা হয়েছে, কিন্তু সেইগুলো খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবুও, অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আমাদের দেশের বাইরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন করে কাজ শুরু করেছেন।’
জাতিসংঘের প্রধানকে একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ইফতারের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ড. খলিলুর রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে বাহবা পেয়েছেন। এমনকি অধ্যাপক ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠিও লিখেছিলেন। চীন ও ব্যাংকক সফরে শফিকুল আলম তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন এবং এটি তার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল।
এই অভিজ্ঞতার কিছু কথা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই বলা যাবে। ব্যাংককের শাংরি-লা হোটেলে বিমসটেকের একটি সরকারি রাতের খাবারের অনুষ্ঠানে যখন সবাই মজাদার থাই খাবার খাচ্ছিলেন, তখন ড. খলিলুর রহমান বাংলাদেশের কূটনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুজন ব্যক্তির সাথে কথা বলছিলেন। প্রথমে তিনি মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ১৫ মিনিট কথা বলেন। এরপর তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সাথে পুরো এক ঘণ্টা কথা বলেন এবং একসাথে খাবার খান। অবশ্যই এগুলো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছিল না।
কিন্তু মাঝে মাঝে এই ধরনের আলোচনাতেই অনেক দিনের বন্ধ দরজা খুলে যায়। সম্ভবত এর কিছু ফল আপনারা গতকালই দেখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে একটি খুবই দক্ষ কূটনৈতিক দল কাজ করছে। তিনি কখনোই কঠিন ও তিক্ত কথা বলতে ভয় পান না। বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে তিনি দেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং প্রধান প্রচারক হিসেবেও কাজ করছেন। এছাড়াও তৌহিদ হোসেনের মতো স্পষ্টবাদী ব্যক্তিও এই দলে আছেন। ড. খলিলের এই দলে যোগ দেওয়া একটি বাড়তি শক্তি এনে দিয়েছে।
একসময় বাংলাদেশকে দুর্বল কূটনীতির জন্য চেনা যেত। বহু বছর ধরে আমাদের কূটনীতিকরা কঠিন বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতেন। তারা প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে সরে গিয়ে মূল্যবান সুযোগ হারাতেন। কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই!’