বাবা মারা যাওয়ার সময় পাশে না থাকার অভিযোগ তুলে স্ত্রী রিয়া মনির সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। তার অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে মুমূর্ষু বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে থাকলেও স্ত্রী রিয়া মনি একবারের জন্যও দেখতে আসেননি, এমনকি বাবার মৃত্যুর পর লাশ দেখতেও যাননি।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে হিরো আলমের পালক বাবা আবদুর রাজ্জাক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন বুধবার বগুড়ার এরুলিয়ায় তাকে দাফন করা হয়। এরপরই হিরো আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে বয়কট করার ঘোষণা দেন। এই বিষয়ে রিয়া মনি গণমাধ্যমে হিরো আলমকে পাল্টা দোষারোপ করলে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন হিরো আলম।
সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম জানান, ২০১৭ সালে তার প্রথম স্ত্রী বগুড়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন, যার ফলে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ২০২২ সালে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও বনিবনা না হওয়ায় তাদের সংসার ভেঙে যায়। এরপর হোটেল রিয়া মনির (হিরো আলম প্রযোজিত সিনেমার নায়িকা) সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তারা বিয়ে করেন।
হিরো আলমের প্রধান অভিযোগ, বিয়ের পর স্ত্রী রিয়া মনি তাকে না জানিয়ে বিভিন্ন সময়ে অন্যদের সঙ্গে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে বহুবার দ্বন্দ্ব হয়েছে। নিষেধ করা সত্ত্বেও রিয়া মনি এই কাজ চালিয়ে যান। সম্প্রতি, গত এক মাস ধরে তার বাবা হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই সময়ে রিয়া মনি বা তার পরিবারের কেউই বাবাকে দেখতে হাসপাতালে আসেননি, এমনকি বাবার মৃত্যুর পরও তারা লাশ দেখতে যাননি। হিরো আলম যখন হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তখন রিয়া মনি অনুমতি ছাড়াই অন্যদের সঙ্গে শুটিং করেছেন এবং সেই কনটেন্ট নিজের ফেসবুক পেজে আপলোডও করেছেন। এসব কারণে বুধবার তিনি রিয়া মনিকে বয়কট (তালাক) করার ঘোষণা দিলে রিয়া মনি গণমাধ্যমে উল্টো তাকে দোষারোপ করেন। এই পরিস্থিতিতে রিয়া মনির সঙ্গে আর সংসার করা সম্ভব নয় এবং তিনি তাকে তালাক দেবেন বলে জানান।
এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে রিয়া মনির বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ আসনে তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এছাড়া, ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ভোট গ্রহণের দিন হামলার শিকার হন।