বুধবার, মে ২১, ২০২৫
৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Home Blog

দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা ইস্যু না হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় বোয়েসেল

0
কোরিয়ার-ভিসা

দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও লেবার কন্ট্রাক্ট (শ্রমচুক্তি) ইস্যু না হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় থাকা বাংলাদেশি রোস্টারদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। লেবার কন্ট্রাক্ট ইস্যু না হওয়ায় অনেকের নাম জব রোস্টার থেকে ডিলিট হয়ে যাচ্ছে।

ফলে কয়েক হাজার তরুণের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানসংক্রান্ত সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ সমস্যা সমাধানে ভিসাপ্রত্যাশীরা মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার ফলে বোয়েসেল এবং রোস্টারকৃতদের অবস্থান মুখোমুখি। তাদের দাবি, বোয়েসেল সঠিকভাবে ফাইল পাঠায় না। ফলে নির্ধারিত কোটা খালি থাকার পরও বাংলাদেশি শ্রমিকরা যেতে পারছেন না।

জানা যায়, বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সেখানকার দূতাবাসে কোনো প্রতিনিধি নেই। তবে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) বলছে, এখানে তাদের কিছু করার সুযোগ নেই। ‘হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস অব কোরিয়া (এইচআরডি কোরিয়া) জব রোস্টারের যে কোটা দেয়, সে অনুযায়ী তারা সার্কুলার প্রকাশ করে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে এইচআরডি কোরিয়া।

এ ছাড়া অনলাইনে প্রাথমিক নিবন্ধনের প্রার্থীর সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি হলে এইচআরডি কোরিয়া কর্তৃক কম্পিউটারাইজড লটারির মাধ্যমে কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের চূড়ান্ত প্রার্থী নিবন্ধন করা হয়। সবকিছু তাদের ওপর ‍নির্ভর করে। তবে তারা রোস্টারদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বোয়েসেলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরিয়ার কোম্পানি এবং নিয়োগকর্তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে কোনো প্রতিনিধি নেই। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চলতি মাসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পিএসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেশটি সফর করার কথা। জুনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অথবা সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্ল্যা ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দক্ষিণ কোরিয়া সফর করবে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ইপিএস কর্মসূচির আওতায় জিটুজি পদ্ধতিতে এইচআরডি কোরিয়ার মাধ্যমে ইপিএস-৯ প্রকল্পে ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৩৪ হাজার শ্রমিক কোরিয়ায় গেছেন। এইচআরডি কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বোয়েসেল অভিবাসন কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে।

তথ্যমতে, অতীতে মোটামুটি ভালোভাবে জব রোস্টাররা কোরিয়ায় গেলেও ২০২২ সাল থেকে মন্দা দেখা দিয়েছে। ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৭৫২ জনের কোটার বিপরীতে ১০ হাজার ২০০ জনের তালিকা দিয়েছিল এইচআরডি কোরিয়া, যেখানে একটি কোটার বিপরীতে চূড়ান্ত নিবন্ধিত প্রার্থীদের মধ্যে তিনটি করে ফাইল পাঠানো হয়। কিন্তু ওই সার্কুলারে প্রাথমিক নিবন্ধন করেন এক লাখ ১২ হাজারের মতো লোক।

ফলে নিয়মানুয়ায়ী ভাষা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধিত করা হয় ৫৫ হাজার ৪০৩ জনকে। পরে ভাষা শেখার জন্য নির্দিষ্ট একটি সময় দেওয়ার পর তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা, মেডিকেল, স্কিল টেস্টসহ প্রয়োজনীয় সব যোগ্যতা প্রমাণ করে এ তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হন ১৬ হাজার ৬৩৮ জন।

চাহিদাকৃত কোটা থেকে চার হাজার ৮০৪ জন কোরিয়ায় গেলেও বাকি কোটা খালি রয়ে যায়। ২০২৪ সালেও একই অবস্থা। এ অবস্থার জন্য বোয়েসেল দায়ী করছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মকাণ্ড ও অদক্ষতাকে। তবে বোয়েসেল এবং কোরিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাসের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে পাল্টা অভিযোগ করছেন জব রোস্টাররা।

সূত্রের তথ্যনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১৪ হাজারের মতো জব রোস্টার রয়েছেন। এ ছাড়াও রোস্টারের তালিকায় প্রবেশ করার জন্য অপেক্ষমাণ আরো চার-পাঁচ হাজার। আগের রোস্টারদের বেশিরভাগের মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হবে। অনেকে তালিকা থেকে চূড়ান্তভাবে বাদ পড়ে যাবেন।

এদিকে জব রোস্টাররা বলছেন, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত নিবন্ধিত হলে আমরা ভাষা শেখার জন্য অনেক টাকা ও সময় ব্যয় করি। কিন্তু বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও এর কোনো ফল পাই না। তাদের দাবি, এখন নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হলে বা জব রোস্টার তালিকা বৃদ্ধি করা হলে সংকট আরো বাড়বে।

কামরুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী আমার দেশকে বলেন, বোয়েসেল আমাদের ফাইল না পাঠিয়ে বলছে পাঠিয়েছে। ফাইল পাঠালে শ্রমচুক্তি কেন ইস্যু হবে না? সব ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমাণ করেই তো আমাদের রোস্টার করা হয়েছে।

সাগর নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, জব রোস্টার নিবন্ধনের জন্য বোয়েসেল আলাদা সার্কুলার প্রকাশ করে। প্রাথমিক নিবন্ধন ফি ৫০০ টাকা। তারপর লটারিতে টিকলে ভাষা পরীক্ষা দিতে চূড়ান্ত নিবন্ধনের ফি প্রায় তিন হাজার টাকা। স্কিল টেস্টের জন্য নেওয়া হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

এইচআরডি কোরিয়া নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে বোয়েসেল চার-পাঁচগুণ বেশি আবেদন কেন গ্রহণ করেÑ এ প্রশ্ন ভুক্তভুগেীদের। তারা বলেন, নির্ধারিত আবেদন জমা হওয়ার পর আবেদনের সাইট বন্ধ করে দেওয়া হয় না কেন? জব রোস্টার প্রার্থীদের আবেগকে কাবু করে তারা টাকা আয় করার জন্য এমনটা করে বলে অভিযোগ করেন তারা।

অনেক জব রোস্টার থাকার পরও কোটা অপূর্ণ থাকছে কেন- এমন প্রশ্নে বোয়েসেল জানায়, অনলাইন সাইটের মাধ্যমে ফাইল করে সব জব রোস্টারের তালিকা এইচআরডি কোরিয়াকে পাঠানো হয়। প্রতি কোটার বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর বায়োডাটা থাকে, যেখানে নিয়োগকর্তা তিনজন থেকে একজনকে বাছাই করে। এখানে বোয়েসেলের কিছু করার সুযোগ নাই।

বোয়েসেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (আইটি) নুরুল ইসলাম কিরণ বলেন, কারো ফাইল আটকে রাখার সুযোগ নেই। সব ধাপে পরীক্ষা দিয়ে যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের ফাইল আমরা পাঠিয়ে দেই।

বোয়েসেলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, জব রোস্টারদের কথা চিন্তা করে ২০২৪ সালের দুটি পরীক্ষা স্থগিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছর একটি পরীক্ষা নিয়েছে তারা। তবে নতুন করে জব রোস্টারের তালিকাভুক্ত করেনি। কিন্তু এতকিছু করার পরও কতিপয় জব রোস্টার প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।

সূত্র আরো জানায়, জব রোস্টারদের কথা চিন্তা করে ই-৯-এর পাশাপাশি ই-৮ প্রকল্পের (সিজনাল কর্মী) প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কোরিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ই-৭ (দক্ষ কর্মী) প্রকল্প নিয়েও তারা জোরালোভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

বোয়েসেলের মহাব্যবস্থাপক (যুগ্ম সচিব) এবিএম আবদুল হালিম বলেন, জব রোস্টাররা ভালো করে জানেন জব রোস্টার মানে চাকরির নিশ্চয়তা নয়। তবুও তারা অহেতুক ‍বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। আমরা তাদের প্রতিটা ফাইল পাঠিয়ে দেই। কোটা খালি থাকার পরও নিয়োগকর্তারা পছন্দ না করার পেছনে অনেক কারণ থাকে। এর মধ্যে রয়েছে অদক্ষতা, ভাষাগত দুর্বলতা, আচার-আচরণ ভালো না হওয়া এবং কর্মক্ষেত্র থেকে চলে যাওয়া।

বোয়েসেলের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শওকত আলী বলেন, জব রোস্টার নিয়ে যারা না বুঝে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে, কোরিয়ার শ্রমবাজারে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। একটি পক্ষের স্বার্থ হাসিলের জন্য পুরো সিস্টেমকে বিতর্কিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দুই সরকারের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ইপিএস ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে একজন প্রার্থী রোস্টারভুক্ত থেকে কোরিয়ান নিয়োগকর্তা কর্তৃক শ্রমচুক্তি ইস্যুর মাধ্যম দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারেন। ডিলিটকৃতদের অটো রোস্টারভুক্তি এবং রোস্টারভুক্তদের ক্রমানুযায়ী চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করার কোনো সুযোগ নেই।

দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে বিধায় মানবিক কারণে ডিলিটকৃতদের অটো রোস্টারের সুযোগ প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এইচআরডি কোরিয়াকে প্রস্তাব দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জব রোস্টারদের স্বপ্ন যেন পূরণ হয়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কোরিয়ার-ভিসা

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছড়িয়ে পড়েছে ভিডিও

0
অভিনেতা সিদ্দীক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিনেতা সিদ্দিককে জামাকাপড় ছেঁড়া অবস্থায় একদল যুবক টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এ সময় তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। ভিডিওতে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায় এবং কিছু যুবক আওয়াজ তুলছেন—‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে স্লোগান দিতে দিতে তাঁকে রাস্তায় হাঁটিয়ে নেওয়া হয়।

পরবর্তীতে সিদ্দিককে রমনা থানার পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আতিকুল আলম জানিয়েছেন, “প্রায় ৪০ মিনিট আগে বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি এখন আমাদের হেফাজতে আছেন।”

ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার কাকরাইল এলাকায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তাঁকে প্রকাশ্যে মারধর করে স্লোগান দিতে দিতে থানার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাঁকে মারধরকারী ব্যক্তিরা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তি ধারাভাষ্যে বলছিলেন, “আমরা সিদ্দিককে, আওয়ামী লীগের একজন দালালকে, পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছি।”

উল্লেখ্য, সিদ্দিক অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাকার গুলশান ও টাঙ্গাইলের মধুপুর আসন থেকে একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রার্থী হয়েছিলেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না, এখনই খোঁজ নিচ্ছি।”

বোয়েসেলে ইপিএস ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা: ক্ষতিগ্রস্ত ২১ হাজার কর্মী ,স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর

0
মানববন্ধন-ইপিএস

ঢাকা, ২৮ এপ্রিল: দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কার্যকর ইপিএস (Employment Permit System) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী পাঠানো হলেও বর্তমানে প্রায় ২১,০০০ কোরিয়াগামী কর্মী চরম অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন।

একটি স্মারকলিপির মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসব কর্মীদের পক্ষে দাবি জানানো হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ইপিএস কর্মীদের প্রক্রিয়াটি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বোয়েসেলের অপেশাদারিত্ব, অনিয়মতান্ত্রিক রোস্টার ব্যবস্থা এবং বাস্তবতানির্ভর পরিকল্পনার অভাবের কারণে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন আজ ভঙ্গ হতে চলেছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, রোস্টারে অন্তর্ভুক্ত থাকা সত্ত্বেও অনেক কর্মী বছরের পর বছর কোরিয়ায় যেতে পারছেন না। একই সঙ্গে নতুন করে সার্কুলার দিয়ে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোয় আগের রোস্টারভুক্তদের বিদেশযাত্রা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

তাদের দাবি, কোরিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্তির হার প্রতিবছর কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ইপিএসের মাধ্যমে কর্মী পাঠানো হুমকির মুখে পড়েছে, যা ভবিষ্যতে এই কর্মসূচির কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

তারা আরও অভিযোগ করেন, মেধা, শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করে বিভিন্ন ধাপে উত্তীর্ণ হওয়া কর্মীরা এখন কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার শিকার। এক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্নভঙ্গের পাশাপাশি মানসিকভাবে অনেকেই চরম বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছেন।

eps-boesl

স্মারকলিপিতে ৯ দফা দাবির মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:

  • ডিলিট হওয়া বা হতে যাওয়া রোস্টারভুক্তদের পূনরায় রোস্টারে অন্তর্ভুক্তির নিশ্চয়তা;
  • নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে মালিকদের কাছে ফাইল পাঠানো বাধ্যতামূলক করা;
  • ৭৫-৮৫% রোস্টারভুক্ত কর্মী বিদেশে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নতুন সার্কুলার বন্ধ রাখা;
  • প্রতিটি বাণিজ্যিক জোনে সরকারি এজেন্ট নিয়োগ;
  • আর্থিক লেনদেনমুক্ত ভিসা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা;
  • নতুন খাত সৃষ্টির মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রোস্টারভুক্তদের বিদেশযাত্রা নিশ্চিত করা।

স্মারকলিপির শেষাংশে বলা হয়, যদি বর্তমান অব্যবস্থাপনা দূর করে রোস্টারভুক্তদের সমস্যা দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে প্রার্থীরা চরম মনোবৈকল্যের শিকার হয়ে আত্মঘাতী সিদ্ধান্তেও নিতে পারেন।

এজন্য তারা রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং বোয়েসেলের কাঠামোগত সংস্কার দাবি করেন, যাতে করে ২১,০০০ কর্মীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।

 

প্রধান উপদেষ্টার সাথে স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার সাক্ষাৎ

0
স্পেসএক্সের-ভাইস-প্রেসিডেন্ট
ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার সাক্ষাৎ করেছেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) কাতারের দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। তারা বাংলাদেশে স্পেসএক্স স্যাটেলাইট পরিষেবা শিগগিরই চালু করার ব্যাপারে চূড়ান্ত পর্বের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।

দুই দশক ধরে ইলন মাস্কের সঙ্গে কাজ করা ড্রেয়ার জানান, এই অংশীদারিত্বের অগ্রগতি নিয়ে তিনি আশাবাদী।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় শেষ রেখায় পৌঁছে গেছি। আমি আমার টিমকে নির্দেশ দিয়েছি যে মে মাসের মধ্যে প্রযুক্তিগত উৎক্ষেপণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকতে।’
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এটি একটি বড় খবর।

মানুষ দিন গুনছে। সময় এলে আমরা তা উদযাপন করবো বড় পরিসরে।’
এই অংশীদারিত্ব পুরোপুরি শুরু হবে একটি প্রযুক্তিগত রোলআউটের মাধ্যমে এবং কয়েকটি চূড়ান্ত বিষয়ের সমাধান হলে।

এছাড়া, ইলন মাস্ক প্রতিষ্ঠিত আরেকটি প্রতিষ্ঠান পেপালও বাংলাদেশে স্পেসএক্সের কার্যক্রমে ডিজিটাল লেনদেনের সহায়ক হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টাকে লরেন ড্রেয়ার বলেন, ‘শুরু থেকেই এটি ছিল আমাদের অংশগ্রহণ করা অন্যতম সুসংগঠিত ও কার্যকরী একটি উদ্যোগ।’

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

ফতুল্লায় অগ্নিকাণ্ডে জুটের গোডাউন পুড়ে ছাই

0
ফতুল্লায়-অগ্নিকাণ্ডে

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি জুটের গোডাউন ও গেঞ্জির কাপড়ের ছাপাখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়।

মঙ্গলবার রাত দেড়টায় ফতুল্লার সস্তাপুর হযরত শাহের মাজার সংলগ্ন হৃদয় আহমেদের জুটের গোডাউনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত দেড়টায় হঠাৎ হৃদয় আহমেদের জুটের গোডাউন থেকে আগুনের লেলিহান শিখা অনেক উপড়ে উঠে যায়। টের পেয়ে আশপাশের লোকজন গোডাউনের চার পাশ দিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এতে আগুন আরো বেড়ে গিয়ে জুটের গোডাউনের পাশে এমরান মিয়ার গেঞ্জির ছাপাখানায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয়রা নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তদন্ত চলছে।

 

টিউলিপ সিদ্দিকের আছে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব

0
টিউলিপ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে। এরপর তার শাসনামলে সংঘটিত বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বড় পরিসরে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তদন্তের অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৭ সালে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, “আমি বাংলাদেশি নই, আমি একজন ব্রিটিশ এমপি।” তবে সরকারি নথিপত্র বলছে ভিন্ন কথা। তার নামে বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), পাসপোর্ট এবং কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। এমনকি তিনি আয়কর রিটার্নও জমা দিয়েছেন।

দুদক সূত্র অনুযায়ী, টিউলিপের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৫০৬৬…..৮, যা ইস্যু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি। এতে তার নাম টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, বাবার নাম শফিক আহমেদ সিদ্দিক এবং মাতার নাম রেহানা সিদ্দিক উল্লেখ রয়েছে। জন্ম তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ এবং রক্তের গ্রুপ বি(+) পজিটিভ। ঠিকানার ঘরে দেওয়া হয়েছে — সুধা সদন, ধানমন্ডি, ঢাকা, যেটি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন হিসেবেই পরিচিত।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকার ভোটার এবং ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর হালনাগাদ তথ্যে তার ভোটার নম্বর ২৬১৩…….৯।

এছাড়া তার নামে বাংলাদেশি পাসপোর্টও রয়েছে। প্রথম পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল ২০০১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, যার নম্বর ছিল কিউ…..৯৯। তাতে জন্মস্থান এবং ইস্যুর স্থান উল্লেখ করা হয়েছিল লন্ডন, যুক্তরাজ্য। পরবর্তী সময়ে মেয়াদ শেষে ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকেই পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়, নতুন নম্বর এএ……৪। পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল আগারগাঁও, ঢাকায়। সেই পাসপোর্টে জরুরি যোগাযোগের ব্যক্তির নাম ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিক।

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের পর সম্প্রতি ঢাকার একটি আদালত টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

এ বিষয়ে লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কেউ আমার সঙ্গে কখনো যোগাযোগ করেনি। সব সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়ে গেছে। আমার আইনজীবীরা তাদের কাছে চিঠি পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন — এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার নিয়ে আমি বিশেষ কিছু বলব না। এটি শুধু আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা। আমার বিরুদ্ধে কোনো ভুল কাজের প্রমাণ নেই।”

বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে মামলা শুরুর পর টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’ পদ থেকেও ইস্তফা দেন।

ডিসেম্বরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব বৈদেশিক দেনা পরিশোধ হবে।

0
বিশ্ব-ব্যাপি-তেল-বাজারে-ধস

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব বৈদেশিক দেনা পরিশোধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় দেশের ভাবমূর্তি সুদৃঢ় করতে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সক্রিয়ভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বৈদেশিক দেনা ছিল প্রায় ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা কমে ৮২৯ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় এই দেনা ছিল ৩.২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা কমে ৮২৯ মিলিয়ন ডলারে এসেছে। কোনো বিলম্বিত দেনা বা জরিমানা নেই, কারণ যথাসময়ে সব বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে এলএনজি আমদানিতে — আগে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৬ থেকে ১৭ ডলার খরচ হলেও এখন তা কমে এসেছে ১১ ডলারে।’

এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী জুন মাসে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের আগে বৈদেশিক দেনা পরিশোধের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মোট বকেয়ার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৫২৯ মিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানি খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ভারতের বিদ্যুৎ আমদানির বিল এবং কয়লা বিল উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, জ্বালানি খাতে এলএনজি আমদানির বিলই সবচেয়ে বড় অংশ।

পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগ জানায়, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাস চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সাল থেকে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকেও আমদানি করা হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আনুমানিক ৫৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৬টি কার্গো এলএনজি আমদানি করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই সংখ্যা ১১৫টিতে উন্নীত হতে পারে, যার ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৬৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। প্রতি কার্গোতে গড়ে খরচ হবে প্রায় ৫৮৭ কোটি টাকা।

ইএমআরডি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সরকার ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জ্বালানি ভর্তুকি বরাদ্দ করেছে। সামান্য শুল্ক সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আরও এলএনজি আমদানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বৈদেশিক দেনা পরিশোধের জন্য ৬০ দিনের একটি চক্র অনুসরণ করা হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই বিদ্যুৎ খাতের সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে।

চীনে নতুনভাবে চালু হয়েছে ‘ট্যাক্স রিফান্ড’ সেবা

0
ট্যাক্স রিফান্ড

৮ এপ্রিল থেকে চীনে নতুনভাবে চালু হয়েছে ‘ট্যাক্স রিফান্ড’ সেবা। এর ফলে বিদেশি পর্যটকরা এখন পণ্য কেনার পর সহজেই কর ফেরত নিতে পারছেন, যা তাদের জন্য চীনে ভ্রমণ আরও সুবিধাজনক ও বন্ধুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

শাংহাইয়ের একটি পোর্সেলিন দোকানে, বেলজিয়ামের পর্যটক অ্যালেক্স ডি কাস্টার তার বন্ধুর জন্য একটি টি-পট ও কাপের সেট কেনেন। নিয়ম অনুযায়ী, টাকা পরিশোধের পর তিনি শপিং ইনভয়েস ও ট্যাক্স রিফান্ড ফর্ম সংগ্রহ করে দোকান থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে কর ফেরত পান।

অ্যালেক্স ডি কাস্টার বলেন,
“এখন সবকিছু অনেক সহজ। আমি খুব দ্রুত ৯ শতাংশ ট্যাক্স ফেরত পেয়েছি। এতে করে আরও কেনাকাটার জন্য আমার হাতে অতিরিক্ত অর্থ থাকছে। এটি একটি দারুণ সুবিধা এবং চমৎকার উন্নতি।”

ট্যাক্স রিফান্ডের জন্য চীন ত্যাগের সময় কাস্টমস ভেরিফিকেশনও করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটিও এখন অনেক বেশি সহজ করা হয়েছে।

ফুতং বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তা ওয়াং সিন জানান,
“আমরা ভাষা অনুবাদসহ আরও অনেক সুবিধাজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এতে পর্যটকরা দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে সেবা নিতে পারছেন।”

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের শেষ প্রান্তে: মার্কো রুবিও

0
মার্কিন-পররাষ্ট্রমন্ত্রী-মার্কো-রুবিও

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান সম্ভব না হলে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো এ বিষয়ে নিজেদের প্রচেষ্টা থেকে সরে আসতে পারে — এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) প্যারিস ত্যাগের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
**“যদি এই যুদ্ধ থামানো সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের হাল ছেড়ে দিতে হবে। দ্রুত আমাদের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”**

প্যারিসে ইউরোপীয় এবং ইউক্রেনীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন মন্তব্য করেন তিনি। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের উপায় খোঁজা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা চালিয়ে আসছে। ইউরোপীয় নেতাদের তেমনভাবে সম্পৃক্ত না করেই যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। তবে এবার ইউরোপীয় দেশগুলোকে আলোচনায় সম্পৃক্ত করতে বৃহস্পতিবার প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক হয়। সেখানে ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। বৈঠক সফল হয়েছে বলেই দাবি করেছে সব পক্ষ।

বৈঠকের শুরুতেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ মার্কো রুবিও ও ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফকে স্বাগত জানান। সম্প্রতি উইটকফ রাশিয়ায় গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন।

যদিও ফ্রান্স এখনো এই বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে সূত্র বলছে, বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে লন্ডনে আরও একটি বৈঠক হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে ফ্রান্স, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

প্যারিসের বৈঠক প্রসঙ্গে মার্কো রুবিও বলেন,
**“আমি এবং উইটকফ এসেছি যুদ্ধ বন্ধের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করতে। যদি দেখিই কোনোভাবেই সফল হওয়া যাচ্ছে না, তাহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলবেন — ‘আমাদের কাজ শেষ।’ কারণ, এটা আমাদের যুদ্ধ নয়, আমরা শুরু করিনি। যুক্তরাষ্ট্র গত তিন বছর ধরে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। আমরা এই যুদ্ধের ইতি টানতে চাই।”**

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই যুদ্ধ থামানোর জন্য ৮৭ দিন ধরে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এটা আদৌ সম্ভব কিনা। সে কারণেই দুই পক্ষকেই আলোচনায় যুক্ত করা হচ্ছে।

এক ফরাসি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা একমত হয়েছেন, এই প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে জানানো হয়, মার্কো রুবিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গেও কথা বলেছেন এবং যুদ্ধ বন্ধে একটি রূপরেখা তুলে ধরেছেন। তবে রূপরেখা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শান্তিচুক্তির খসড়ায় ইউক্রেন সম্মতি দিলেও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, প্যারিসের বৈঠকে যারা অংশ নিয়েছেন, তারা যেন ক্রেমলিনের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেন।

জেলেনস্কির ভাষায়,
রাশিয়া প্রতিদিন, প্রতি রাত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে তাদের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করা। তাহলেই শান্তিচুক্তি সম্ভব।

সূত্র: সিএনএন, ডয়েচে ভেলে

 

 

চাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে,কমছে মুরগীর দাম।

0
চাল মুরগি-পেয়াজ

বাজারে সরু চাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, তবে ঈদ-পরবর্তী সময়ে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কমেছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সরু বা মিনিকেট চালের দাম বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। গত মাসে এই চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছিল এবং গত দুই সপ্তাহে আরও ২ থেকে ৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল ও কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন মানের নাজিরশাইল চাল ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে খুচরা দোকানে রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগে ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা ছিল। মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম আরও বেশি, প্রতি কেজি ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বোরো ধান উঠলে চালের দাম কমতে পারে।

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮৯ টাকা হয়েছে, যা আগে ১৭৫ টাকা ছিল। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও লিটারে ১২ টাকা বেড়েছে।

অন্যদিকে, দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। বড় বাজারগুলোতে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় এবং পাড়া-মহল্লায় ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে পেঁয়াজের দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি ছিল।

মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আতাবুল ইসলাম বলেন, তিনি গত দুই-তিন মাস ধরে বেশি দামে মিনিকেট চাল কিনছেন এবং এখন সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে তার মাসের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।

শীতকাল শেষ হলেও বাজারে গ্রীষ্মের সবজির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। যেমন, প্রতি কেজি পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২২০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ২২০ থেকে ২৩০ টাকা এবং সোনালি মুরগির দাম ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি ছিল।

ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়েছে, ফলে এক লিটারের দাম ১৮৯ টাকা হয়েছে, যা আগে ১৭৫ টাকা ছিল। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও লিটারে ১২ টাকা বেড়েছে।

সয়াবিন ও পাম তেলের আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা অস্বস্তি বোধ করছেন। মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আতাবুল ইসলাম জানান, মিনিকেট চালের পাশাপাশি এখন তেল ও পেঁয়াজের দাম বাড়ায় তাদের মাসিক খরচ অনেক বেড়ে গেছে।