মধ্য ইউক্রেনের শহর ক্রিভি রিহে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন। দেশটির রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন যে নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশু। এই ক্রিভি রিহ শহরেই জেলেনস্কি বড় হয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত হানে। ছবিতে দেখা গেছে, একজন নিহত ব্যক্তি খেলার মাঠে পড়ে আছেন। অন্য একটি ভিডিওতে একটি ১০ তলা ভবনের একটি বড় অংশ ভেঙে যেতে দেখা যায় এবং আহত লোকজন রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন।
পরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে যে তারা একটি রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়েছে, যেখানে নাকি ‘ইউনিট কমান্ডার এবং পশ্চিমা প্রশিক্ষকরা’ একটি বৈঠকে বসেছিলেন। তারা আরও দাবি করেছে যে এই হামলায় ৮৫ জন নিহত হয়েছেন, যদিও তারা এর কোনো প্রমাণ দেয়নি।
তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এর জবাবে বলেছে যে রাশিয়া তাদের খারাপ কাজ ঢাকতে মিথ্যা কথা বলছে। মস্কো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করার জন্য ক্লাস্টার বোমাযুক্ত ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এই হামলাটি ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে পুরোদমে হামলা শুরু করার পর থেকে ক্রিভি রিহে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘শুক্রবারের হামলায় কমপক্ষে পাঁচটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলা এখনও চলছে, কারণ রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে চায় না, এটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
ক্রিভি রিহের প্রতিরক্ষা প্রধান ওলেকসান্ডার ভিলকুল বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত করেছে। তিনি জানান, ‘ক্ষেপণাস্ত্রটি বিস্ফোরিত হয়েছে… এবং অনেক লোক আহত হয়েছে। শিশুরা খেলার মাঠে বা তার আশেপাশে মারা গেছে।’ ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের প্রধান সেরহি লিসাক বলেছেন, ৪০ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোটজনের বয়স মাত্র তিন মাস।
পরে ক্রিভি রিহের প্রতিরক্ষা প্রধান ওলেকসান্ডার ভিলকুল আরও জানান যে শহরটিতে অনেক ড্রোন হামলাও হয়েছে, যার ফলে অন্তত চারটি জায়গায় আগুন লেগেছে। তিনি বলেন, ‘ড্রোনের আঘাতে একটি বাড়িতে একজন বৃদ্ধা নারী পুড়ে মারা গেছেন এবং অন্য জায়গায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।’
এদিকে, দিনের শুরুতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সামরিক প্রধানরা কিয়েভে জেলেনস্কির সাথে দেখা করেছেন। তারা ইউক্রেনে বিদেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েন করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হতে পারে। তবে, সহিংসতার কমার কোনো লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র: বিবিসি