গতকাল শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে মিয়ানমারে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। থাইল্যান্ডের আবহাওয়া অধিদফতরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ বিভাগ জানায়, ওই রাতে মিয়ানমারে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যেগুলোর মাত্রা রিখটার স্কেলে ১ দশমিক ৯ থেকে ৫ দশমিক ৬ এর মধ্যে ছিল।
সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি রাত ১০টা ২৫ মিনিটে আঘাত হানে এবং এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল অবস্থিত ছিল। থাইল্যান্ডের মায়ে হং সন প্রদেশের মুয়াং জেলার উত্তর-পূর্ব দিকে, প্রায় ২৭৬ কিলোমিটার দূরে এর উৎপত্তিস্থল ছিল।
এর আগে, সন্ধ্যা ৭টা ৪৩ মিনিটে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে কাছে ২ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার গভীরতা ছিল মাত্র ১ কিলোমিটার। এটি মায়ে হং সনের পাং মাফা জেলা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সংঘটিত হয়েছিল।
থাই ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ বিভাগ আরও জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পগুলোর কম্পন মায়ে হং সন এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অনুভূত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা বড় ধরনের কোনো প্রভাবের খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সর্বশেষ তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২৮ মার্চ মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। মান্দালয়ের কাছে এর কেন্দ্রস্থল ছিল। সেই ভূমিকম্পে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারান এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। রাস্তাঘাট, সেতু এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়। উদ্ধার কার্যক্রম চলমান থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ধারণা দিয়েছে যে, ভূমিকম্প এবং এর পরবর্তী আফটারশকগুলোর কারণে মিয়ানমারের ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত।